গুজবের ইতিবৃত্ত : আমাদের করণীয়
গুজবের ব্যবহার
ইতিহাসজুড়ে গুজবকে রাজনৈতিক বিপ্লবের প্রচার, ব্যক্তি স্বার্থ, ব্যবসায়িক স্বার্থ হাসিলে কারসাজি ও নিয়ন্ত্রণ এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের জন্য সাম্প্রদায়িক উসকানির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের উদাহরণ রয়েছে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় ‘কর্পস ফ্যাক্টরি’ গুজব ছড়িয়ে দাবি করা হয়েছিল যে জার্মানরা তাদের নিজস্ব সৈন্যদের মৃতদেহ ব্যবহার করে পণ্য তৈরি করছে, এটি যুদ্ধকালীন প্রোপাগান্ডা হিসেবে কার্যকর প্রমাণিত হয়েছিল। আরব বসন্তের সময় তিউনিসিয়ায় ফেসবুক এবং টুইটারের মতো সামাজিক প্লাটফর্মের মাধ্যমে গুজবের দ্রুত বিস্তার ঘটতে দেখা যায়। অতি সম্প্রতি বাংলাদেশসহ পার্শ্ববর্তী একটি দেশে জনগণের ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে ফেসবুকে গুজব সৃষ্টির মাধ্যমে অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়। পদ্মা সেতু নির্মাণে শিশুদের মাথা লাগবে এমন গুজব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিলে সারা দেশে ছেলেধরা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। রাজধানীর বাড্ডায় তসলিমা রেনু নামে এক নারীকে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। পরে জানা যায় সন্তানের স্কুল ভর্তির জন্য প্রয়োজনীয় তথ্যের খোঁজ নিতে গিয়েছিলেন তিনি। এছাড়াও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য নিয়ে গুজব ছড়িয়ে পড়লে লবণের দামেও অস্বাভাবিক বৃদ্ধি ও মানুষের প্রয়োজনের অধিক পরিমাণে লবণ কেনার হিড়িকও আমরা দেখতে পাই। অতিসম্প্রতি করোনা মহামারি ও ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দাকে পুঁজি করে একটি গুজব ছড়িয়ে পড়লে অনেক গ্রাহক আতঙ্কিত হয়ে তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে জমানো টাকা তুলে ফেলেন। পরবর্তীতে এই তথ্যটি মিথ্যা প্রমাণিত হলে গ্রাহকরা তাদের ভুল বুঝতে পারেন।